ডেঙ্গু প্রতিরোধে উপেক্ষিত প্রাক্-প্রতিরোধ ব্যবস্থা: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য
সম্পাদকীয়। | সেপ্টে ১৯, ২০২৪ | ০৬:০৯
ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল হলো প্রাক্–প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অবহেলা করা। যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দুটি প্রধান স্তম্ভ হলো প্রাক্–প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা। আমাদের নীতিনির্ধারকেরা চিকিৎসার দিকে কিছুটা মনোযোগ দিলেও প্রাক্–প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকেই গেছে, বিশেষ করে ডেঙ্গু মোকাবিলায়।
গত বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহ অবস্থা দেখে স্বাভাবিকভাবেই আশা করা গিয়েছিল যে, এবার কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে আরও বেশি সচেতন হবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছু ঘটেনি। এর ফলে জনসাধারণের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগ এখনো বিরাজমান।
গতকালের প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১৭ দিনে ৩০ জনের মৃত্যু হলো, যা এই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত এ বছর ডেঙ্গুতে ১১৩ জনের মৃত্যু এবং ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।
মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কম হলেও প্রশ্ন থেকে যায়—আমরা কি এই সংখ্যাটি আরও কমিয়ে আনতে পারতাম না? অবশ্যই পারতাম, যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করে, তাদের কাজ শুধুমাত্র রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া, কিন্তু ডেঙ্গু প্রতিরোধের কাজটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে, যারা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না।
সিটি করপোরেশনের মশকনিধন কার্যক্রম অনেক জায়গায় বন্ধ রয়েছে, যা ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে বড় একটি বাধা। মশকনিধন কর্মসূচি কার্যকর করতে হলে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তবে এই উদ্যোগ সিটি করপোরেশনকেই নিতে হবে।
বৃষ্টির মৌসুম এখনো শেষ হয়নি, তাই প্রতিটি এলাকায় ওষুধ ছিটানো ও বাড়িঘর পরিষ্কার রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে নাগরিক সচেতনতা খুবই জরুরি। করোনাভাইরাস মহামারির সময় সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা তা মোকাবিলা করতে পেরেছিলাম। ডেঙ্গু প্রতিরোধেও সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।