নিজস্ব প্রতিবেদক,চকরিয়া
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার হালকাকারা এলাকায় অসহায় বিধবা মহিলার বসতবাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বাধা দেয়ায় হামলাকারীরা মা-ছেলেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে। ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা বাড়ির ভেতর থেকে নগদ এক লাখ টাকা, তিনটি পালিত ছাগল লুটে নিয়ে গেছে। ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন করেছে লক্ষাধিক টাকার মালামাল। বুধবার ২৩ নভেম্বর বেলা ১১টা দিকে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের হালকাকারা মৌলভীরচর এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা।
আহতদের মধ্যে স্থানীয় আবু শামার ছেলে শাহাব উদ্দিন (২৩) ও তার মাতা আজবাহার খাতুন (৬৫) কে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহৃত বিধবা মহিলা আজবাহার খাতুন বাদি হয়ে গতকাল বিকালে চকরিয়া থানায় ৬ জনের নামোল্লেখ করে একটি এজাহার জমা দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হলেন
স্থানীয় মৌলভীরচর এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে
১। বেলাল উদ্দিন বাবু (৪২), জালাল উদ্দিন (৩০), মাহমুদুল করিম (২৫) রেজাউল করিম (২২), মানিক (২৬) ও উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িপুকুর এলাকার তাজু মিয়ার ছেলে নয়ন (২০)। এছাড়াও এজাহারে আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করা হয়েছে।
এজাহারে বাদি আজবাহার খাতুন বলেন, অভিযুক্ত আসামীগণ উশৃঙ্খল ও পর স্বত্ব জবর দখলকারী প্রকৃতির লোক হয়। ঘটনার দিন বুধবার বেলা এগারোটার দিকে তাঁরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে হালকাকরা মৌলভীরচর এলাকায় আমার খালাত বোন তাহেরা বেগমের বাড়িতে অতর্কিত ঢুকে পড়ে। এসময় গৃহকর্ত্রী তাহেরা বেগম কিছু বুঝে উঠার আগে দুর্বৃত্তরা তার বসতঘরে ব্যাপক ভাংচুর শুরু করে। ঘটনার সময় তার শৌর চিৎকার শুনে আমি এবং আমার ছেলে সাহাব উদ্দিন ঘটনাস্থলে যাই। এসময় অভিযুক্তরা আমাদেরকে দেখে উল্টো গালি গালাজ করে সেখান থেকে চলে যেতে বলে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি দেখে আমরা তাদেরকে বাধা দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলে সাহাব উদ্দিনের মাথায় ধারালো কিরিচ দিয়ে কোপ দেয়। এতে আমার ছেলের কপালের বাম পাশে হাঁড়কাটা গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। অজ্ঞাতনামা আসামীরা লাঠি সোটা দিয়ে আমার ছেলে সাহাব উদ্দিনের সারা শরীরে পিটিয়ে জখম করে। এসময় আমি তাদের কবল থেকে আমার ছেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে আসামিরা লোহার রড দিয়ে আমার বাম পাজরে আঘাত করে। এতে আমার কোমর ও পাজরে হাঁড়ভাঙ্গা গুরুতর জখম হয়েছে। একপর্যায়ে তারা আমার তলপেটে স্বজোরে লাথি মেরে জখম করে।
বাদি আজবাহার খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার সময়
আসামিরা আমার খালাতো বোন তাহেরা বেগমের বাড়ি থেকে নগদ এক লাখ টাকা, তিনটি পালিত ছাগল, আমার ছেলে শাহাব উদ্দিনের কাছ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা, বাইশ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ফোন সেট লুটে নিয়ে গেছে। এছাড়া বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনায় অন্তত ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ক্ষতিসাধন হয়েছে।
বাড়ির গৃহকর্ত্রী তাহেরা বেগম বলেন, বাড়িতে হামলার ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে আমাদেরকে প্রায় ৪০ মিনিট জিন্মিদশায় রেখেছিল। পরে তারা চলে গেলে আমরা শৌর চিৎকার দিই। পরে আমাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আমার খালাতো বোন আজবাহার খাতুন ও তার ছেলে সাহাব উদ্দিনকে উদ্ধার করে চকরিয়া
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, চকরিয়া পৌরসভার হালকাকারা মৌলভীরচর এলাকায় বসতবাড়িতে হামলা ঘটনায় একটি এজাহার পাওয়া গেছে। এব্যাপারে তদন্তপুর্বক আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ##